চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি পোল্যান্ড

খেলাধুলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩:৫৭:৪৬পিএম, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২

ফরাসি ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা তারকা মিশেল প্লাতিনি। পরবর্তীতে উয়েফার সভাপতি হয়েছিলেন। ১৯৮০’র দশকে ফ্রান্স দলকে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট মানতো সবাই। ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছিল শীর্ষ ফেবারিট। তবে মিশেল প্লাতিনি আর টিগানাদের ফ্রান্সও ছিল ফেবারিটের তালিকায়। দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়ে তারা সেমিফাইনালে উঠে আসে। শেষ চারের লড়াইয়ে পাওলো রোসির ইতালির কাছে হেরে যায় ফ্রান্স। এরপর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পোল্যান্ডের মুখোমুখি হয় ফ্রান্স। মিশেল প্লাতিনি সেই ম্যাচে খেলতে নামেননি। ফ্রান্স ৩-২ গোলে হেরে যায় পোল্যান্ডের কাছে।

চার দশক পর আবারও বিশ্বকাপে মুখোমুখি ফ্রান্স-পোল্যান্ড। এবার নকআউট পর্বের শুরুতেই আজ আল থুমামা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। কী অপেক্ষা করছে এই ম্যাচে! ফরাসিরা কী অতীত পরাজয়ের মোক্ষম একটা প্রতিশোধ নিতে চায়! এই ম্যাচে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সই ফেবারিটের তকমাধারী। অন্যদিকে আছে রবার্ট লেবানডস্কির পোল্যান্ড। বর্তমান বিশ্বের ফুটবল তারকাদের মধ্যে অন্যতম সেরা। ফিফার কাছ থেকেও সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন লেবানডস্কি। বল নিয়ে ছুটতে শুরু করলে তাকে থামানো কঠিন। অবশ্য পোলিশ আক্রমণের পুরোধা লেবানডস্কিই। তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় পোল্যান্ডের খেলাটা। অন্যদিকে বহু প্রতিভাধারী ফ্রান্স। এই দলে আছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। মেসি-রোনালদো যুগের পর তাকেই ভাবা হচ্ছে যোগ্য উত্তরসূরি। তবে এমবাপ্পেই ফ্রান্সের ফুটবলে শেষ কথা নন। এখানে আছেন আঁতোয়ান গ্রিজমান। আছেন ওসমান ডেম্বলেরাও।

পোল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে বেশ সতর্ক ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। তিনি কেবল লেবানডস্কিকে নিয়ে ভাবছেন না। পাশাপাশি পোলিশ গোলরক্ষককে নিয়েও ভাবছেন। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত সব সেভ করেছেন স্কেজেসনি। এজন্যই দিদিয়ের দেশম গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘পোল্যান্ড দারুণভাবেই ডিফেন্ড করতে জানে। টুর্নামেন্টে তারা নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছে। তবে পোল্যান্ড মানেই কেবল ডিফেন্স ভালো তা নয়। তাদের আক্রমণভাগের দিকে তাকান। সেখানে লেবানডস্কির মতো তারকা আছেন।’ লেবানডস্কি ছাড়াও পোলিশ গোলরক্ষকের প্রশংসা করেছেন দেশম। ক্যারিয়ারে ২৬টা পেনাল্টি সেভ করেছেন স্কেজেশনি। রেকর্ডটা মাথায় রাখছে ফ্রান্স।

ফ্রান্স-পোল্যান্ড সবমিলিয়ে ১৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে আট বারই জয় পেয়েছে ফ্রান্স। তিনবার জয় পেয়েছে পোল্যান্ড। বাকি পাঁচবারই ড্র হয়েছে দুই দলের লড়াই। শেষবার পোলিশদের কাছে ফরাসিরা হেরেছে ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে। এরপর সাত ম্যাচ খেলে সবকটিতেই অপরাজিত ফ্রান্স। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে তিউনিসিয়ার কাছে হেরে গেছে ফ্রান্স। প্রথম একাদশে পরিবর্তন এনে পরাজয়ের শিকার হয়েছেন দিদিয়ের দেশম। তবে সেই পরাজয়টাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন তিনি। সাইডবেঞ্চের পরীক্ষা নিয়ে নিয়েছেন। তাদের সামর্থ্যরে কিছু নথিপত্রও হাতের কাছে রাখলেন। পরাজয়ের বৃত্ত ভেঙে নকআউট পর্বে আবার জয়ের পথে ছুটবে ফ্রান্স, এমনটাই আশা করেন দেশম। অধিনায়ক হুগো লরিসও গতকাল এমনটাই বলে গেলেন। দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হচ্ছে পোল্যান্ড। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে ভালোই ধারণা আছে কোচ মিকনিবিজের। তারপরও নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দিয়ে ভালো ফলাফল নিয়ে মাঠ ছাড়তে চায় পোল্যান্ড।