শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান
ব্যাট হাতে আলো ছড়ালেন আফগানিস্তানের প্রথম চার ব্যাটসম্যান। এদের মধ্যে ইব্রাহিম জাদরান উপহার দিলেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। পরে বল হাতে জ্বলে উঠলেন ফজলহক ফারুকি। শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতেই হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল আফগানরা।
পাল্লেকেলেতে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের জয় ৬০ রানে। ২৯৪ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকদের ২৩৪ রানে গুটিয়ে দিয়েছে সফরকারীরা। ১২০ বলে ১১ চারে ১০৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা ইব্রাহিম। রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৫৫ বলে ৫৩ ও রহমত শাহ ৬৪ বলে করেন ৫২ রান।
জবাবে ওপেনার পাথুম নিসানকার ৮৩ বলে ৮৫ ও সাত নম্বরে নেমে ভানিন্দু হাসারাঙ্গার ঝড়ো ইনিংসে আশা জাগায় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতায় লক্ষ্যের ধারেকাছে যেতে পারল না লঙ্কানরা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া হাসারাঙ্গা ৪৬ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন ৬৬ রানের ইনিংস। আফগান পেসার ফারুকি ৪৯ রানে নেন ৪ উইকেট। আরেক পেসার গুলবাদিন নাইবের প্রাপ্তি ৩৪ রানে ৩টি।
ওয়ানডেতে দুই দলের পাঁচবারের দেখায় আফগানিস্তানের দ্বিতীয় জয় এটি। সীমিত ওভারের দুই সংস্করণ মিলিয়ে সবশেষ চারবারের দেখায় দুটিই জিতল আফগানরা। গত অগাস্টে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে তাদের জয় ছিল ৮ উইকেটে।
আফগানিস্তান ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। পঞ্চম ওভারে স্লিপে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ ফেলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগান গুরবাজ। ৫০ বলে তুলে নেন ফিফটি। এরপরই তাকে এলবিডব্লিউ করে ৮৮ বলে ৮৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন হাসারাঙ্গা।
তিনে নামা রহমতের সঙ্গে ১১৮ রানের আরেকটি বড় জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ইব্রাহিম। এই ওপেনার ফিফটি তুলে নেন ৬২ বলে। রহমত ৬১ বলে ফিফটির পথে আফগানিস্তানের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে স্পর্শ করেন তিন হাজার রানের মাইলফলক।
গুরবাজের মতো রহমতও ফেরেন ফিফটির পরপরই। ইব্রাহিম দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১১৬ বলে। তাকে থামান মাহিশ থিকশানা। চারে নেমে ২৫ বলে ৪২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। যদিও শেষ পাঁচ ওভারে ৩১ রান তুলতে ৫ উইকেট হারায় আফগানরা।
রান তাড়ায় শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। নিসানকা ছাড়া প্রথম ছয় জনের আর কেউ ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তাই বলতে গেলে একাই দলকে টানেন নিসানকা। তার ৮৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস থামান ফারুকি। এরপর ঝড় তোলেন হাসারাঙ্গা। মোহাম্মদ নবির এক ওভারে মারেন ৪টি চার ও একটি ছক্কা।
অন্য প্রান্তে অবশ্য উইকেট পড়তে থাকে যথারীতি নিয়মিত। হাসারাঙ্গাকে বোল্ড করে সবকিছুর ইতি টেনে দেন ফারুকি। ১২ ওভার বাকি থাকতেই অল আউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৯৪/৮ (গুরবাজ ৫৩, ইব্রাহিম ১০৬, রহমত ৫২, নাজিবউল্লাহ ৪২, নাইব ২২, রশিদ ৪, নবি ২, শাহিদি ২, মুজিব ১*, ইয়ামিন ০*; রাজিথা ১০-০-৫৬-১, লাকশান ৬-০-৪৩-১, কুমারা ৮-০-৫৪-১, শানাকা ১০-০-৪২-২, হাসারাঙ্গা ১০-০-৪২-২, থিকশানা ১০-০-৬২-১, ধনাঞ্জয়া ৩-০-১৪-০)
শ্রীলঙ্কা: ৩৮ ওভারে ২৩৪ (নিসানকা ৮৫, মেন্ডিস ১, চান্দিমাল ১৪, ধনাঞ্জয়া ১৬, আসালাঙ্কা ১০, শানাকা ১৬, হাসারাঙ্গা ৬৬, লাকশান ২, থিকশানা ৩, রাজিথা ৮, কুমারা ০*; ফারুরি ৯-০-৪৯-৪, ইয়ামিন ৬-০-৪৬-২, মুজিব ৫-০-৩৩-০, নাইব ৮-০-৩৪-৩, রশিদ ৮-০-৪০-১, নবি ২-০-২৭-০)
ফল: আফগানিস্তান ৬০ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে আফগানিস্তান
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইব্রাহিম জাদরান