বিদায়ী বাংলাদেশের কলকাতায় নিযুক্ত মান্যবর ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব তৌফিক হাসান এর টাইমস্কুপ নিউজকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার
বিদায়ী বাংলাদেশের কলকাতায় নিযুক্ত মান্যবর ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব তৌফিক হাসান এর টাইমস্কুপ নিউজকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন,টাইমস্কুপ চিফ এডিটর আনোয়ারুল হক ভূঁইয়াঃ-
১)প্রশ্নঃ- বাংলাদেশের ট্যুরিজম খাতকে ভারতে প্রচার প্রসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাইকমিশন কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেছেঃ-
উত্তরঃ- বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে প্রসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, কলকাতা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে | মিশনের ওয়েব সাইটে বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন ভিত্তিক তথ্য প্রদান করা হয়েছে | কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পর্যটন মেলায়, বই মেলায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন অংশগ্রহণ করে থাকে| অনেকে মিশনে ফোন করেও পর্যটন ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন | কলকাতায় ইতিপূর্বে দুর্গা পূজার সময় পূজা মণ্ডপের পাশে বাংলাদেশ ভ্রমণের উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে | এছাড়া সল্টলেকে স্থাপিত বাংলাদেশ ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারেও বাংলাদেশের টুরিস্ট প্লেসগুলো সম্পর্কে ভারতীয় পর্যটকদের অবহিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে |
২) প্রশ্নঃ- ভারতীয়দের জন্য কবে নাগাদ বাংলাদেশের ট্যুরিস্ট ভিসা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছেঃ-
উত্তরঃ- ভারতীয়দের জন্য বাংলাদেশের টুরিস্ট ভিসা চালু করার বিষয়টি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন | যেহেতু শোনা যাচ্ছে এ মাসের শেষ নাগাদ ভারতের কমার্শিয়াল ফ্লাইট চালু হবে, কাজেই ধারণা করা যায় যে এপ্রিল মাসে টুরিস্ট ভিসা চালুর সম্ভাবনা আছে |
৩) প্রশ্নঃ-আপনার এই কলকাতার উপ হাই কমিশন কর্মজীবনে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য অভিজ্ঞতা কি?
উত্তরঃ- আমার দীর্ঘ সাড়ে চার বছরের কলকাতার উপ হাই কমিশনের কর্মজীবনে অনেক উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা আছে | শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন তার মধ্যে একটি | এ ছাড়াও মুজিব বর্ষের পুরো সময়টা কলকাতায় কাটাতে পারাও একটি দুর্লভ অভিজ্ঞতা | এ সময়ে আমরা অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি, নির্মাণ করেছি বঙ্গবন্ধু মঞ্চ, আবক্ষ ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নামে টেরাকোটা ম্যুরাল ইত্যাদি| এ ছাড়া আমরা মুজিব বর্ষ আর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে দুটো মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছি | ৪৫ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ফোকাল থিম কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণও ছিল উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা |
৪) প্রশ্নঃ- বাংলাদেশ ও ভারতের বর্ডার কবে নাগাদ চালু হতে পারে?
এব্যাপারে দু-দেশের মধ্যে কি কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে?
উত্তরঃ- বাংলাদেশ ও ভারতের বর্ডার বিশেষ করে বেনাপোল - পেট্রাপোল সীমান্ত খোলা রয়েছে | তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় টুরিস্ট ভিসায় বর্ডার দিয়ে আসার অনুমতি ভারত সরকারের তরফ থেকে আপাতত বন্ধ আছে | টুরিস্টরা বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র বাই এয়ার ভারতে প্রবেশ করতে পারছে | আমার মনে হয় কমার্শিয়াল ফ্লাইট এবং বাংলাদেশী টুরিস্ট ভিসা চালু হলে বর্ডার দিয়ে আবার লোকজন আগের মতো আসা যাওয়া করতে পারবে |
৫) প্রশ্নঃ- চিকিৎসায় কোনো বাংলাদেশী রোগীর মৃত্যু হলে পরিবারের কি সহায়তা পেতে পারেন মৃত দেহ দেশে নিয়ে যেতে।
উত্তরঃ- মৃতদেহ বাংলাদেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন দ্রুততার সাথে কাজ করে থাকে | মৃত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ ও পুলিশ রিপোর্ট ( জিডি ) প্রাপ্তি সাপেক্ষে বাংলাদেশ মিশন থেকে এন ও সি দেয়া হয় এবং পাসপোর্ট ক্যানসেল করে দেয়া হয় | এরপর ভারতের 'এফ আর আর ও' থেকে এক্সিট ক্লিয়ারেন্স নেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হয় | অনেকক্ষেত্রে মৃতদেহ বেনাপোল বর্ডার পর্যন্ত পরিবহন করার যাবতীয় ব্যবস্থাও (গোসল, কফিন, গাড়ি ইত্যাদি) মিশন সমন্বয় করে থাকে|