যে কারণে পার্লামেন্টে ক্ষমা চাইলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪:১২:৪২পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

বিগত ৭০ বছর ধরেনিউজিল্যান্ডে সরকারি এবং চার্চের আশ্রয়শিবিরে অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত কমিশনের এমন রিপোর্টের ভিত্তিতে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন। তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেন, এমন ঘটনা যাতে আর কখনও না ঘটে, সেদিকে নজর দেওয়া হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তও হবে।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টের গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। যাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করেছেন, আশ্রয়হীন হয়ে অথবা মানসিক সহায়তার প্রয়োজনে রাষ্ট্র বা চার্চের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তারা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তাদের উপর অত্যাচার হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের সরকার এই অভিযোগ নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এরপরেই পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন নিজের এবং সাবেক সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

কমিশন জানিয়েছে, ১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অন্তত ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার এবং হেনস্থার শিকার হয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হওয়াদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। বহু শিশু মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতেনর শিকার হয়েছে। কিন্তু চার্চ কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে এসব নির্যাতন হওয়ার কারণে তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ জানাতে পারেনি।

কমিশনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বহু শিশুকে বিনা কারণে তাদের মায়েদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জোর করে অন্য কোথাও দত্তক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। বহু নারী জানিয়েছেন, তাদের ইলেকট্রিক শকের মাধ্যমে নির্যাতন করা হয়েছে।

কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, মূলত বর্ণবাদের কারণেই এই অত্যাচার চালানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনগোষ্ঠীর মানুষ।প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশনের এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কখনও না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে।