টপ অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তা

খেলাধুলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩:১৭:১৯পিএম, ১৩ জুন, ২০২৪

ক্যারিবীয় সাগরের ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট ভিনসেন্ট। সবুজ বৃক্ষরাজিতে ঘেরা ছোট ছোট পাহাড়বেষ্টিত দ্বীপরাষ্ট্রটি নয়নজুড়ানো। রাজধানী কিংস টাউনের আরনেস ভেল স্টেডিয়ামটি আরও সুন্দর। স্টেডিয়ামের এক পাশে ক্যারিবীয় সাগর, বাকি তিন দিকে ছোটবড় ঘরবাড়ি। মনজুড়ানো স্টেডিয়ামটিতে টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে ২০১৩ সালের পর। প্রায় ১১ বছর আগে এ স্টেডিয়ামে দুটি ২০ ওভারের ম্যাচ খেলেছিল স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান। দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের পর মাঠের সবুজ ঘাসে আজ খেলবে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস।

টি-২০ বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপ থেকে সুপার এইট খেলতে দুই দলের হেভিওয়েট লড়াই শুরু হবে রাত সাড়ে ৮টায়। যে দল জিতবে, তারাই সুপার এইটের পথে পাইপ লাইনে উঠে যাবে। নেদারল্যান্ডস আইসিসি সহযোগী দেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর বাংলাদেশ টেস্ট খেলুড়ে দেশ। নাজমুল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, তানজিদ তামিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিব, রিশাদ হোসেনদের দিকে তাকিয়ে। টিম ম্যানেজমেন্ট অপেক্ষায় টপ অর্ডারের জ্বলে ওঠার।

চলতি আসরে এখন পর্যন্ত যে দুটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, দুটিতেই পুরোপুরি ব্যর্থ টপ অর্ডার। কোনো জুটি নেই ওপেনিংয়ে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পাহাড়সমান চাপের ম্যাচে জয় পেতে টপ অর্ডার ব্যাটিং লাইনের জ্বলে ওঠার বিকল্প নেই। অবশ্য মান বাঁচাচ্ছেন পেসাররা। দারুণ বোলিং করছেন তানজিম সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। তানজিম সাকিব ২ ম্যাচে ৪টি, তাসকিন দুই ম্যাচে ৪টি ও মুস্তাফিজ দুই ম্যাচে ৩ উইকেট নেন।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতলেও ব্যর্থ দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ। রান করেছিলেন লিটন। দলকে জয় উপহার দিয়েছিলেন তরুণ তাওহিদ ও অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ। টপ অর্ডারের সঙ্গে ব্যর্থ ছিলেন সাকিবও। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে সাফল্য পেতে বদলে ফেলা হয় ওপেনিং জুটি। ক্যারিয়ারে ১৩টি ম্যাচে শূন্য করে রেকর্ডবুকে নাম লেখানো সৌম্যর বদলে নেওয়া হয় জাকের আলিকে। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ওপেন করেছিলেন তানজিদ ও সৌম্য। ১.৪ওভারে ৬ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন দুই সৌম্য ও তানজিদ। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ৪ নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল। লিটন ওয়ান ডাউনে ৩৬ বলে ৩৮ রান করেছিলেন।

নাজমুল করেছিলেন ৭ রান। তানজিদ ৩ রানে ফিরেছিলেন সাজঘরে। আফ্রিকা ম্যাচে সৌম্যর জায়গায় ওপেনিংয়ে তানজিদের সঙ্গে জুটি গড়েন নাজমুল। এবারও ব্যর্থ। ৯ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন। তানজিদ ৯ রান করেন ৯ বলে। শান্ত আউট দলীয় ৫০ রানে। ২৩ বলে ১৪ রান করেন। ওয়ান ডাউনে খেলেন লিটন। ১৩ বলে এক ছক্কায় ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় হিমালয়সমান চাপে পড়ে যান তরুণ তাওহিদ ও মাহমুদুল্লাহ। সাকিব ৪-৫ নম্বরে ব্যাট করলেও রান করতে পারছেন না। ৩৭ বছর বয়সি সাকিবকে নিয়ে ভীষণ চিন্তিত টিম ম্যানেজমেন্ট। সাকিবকে আজ সাজঘরে বসে থাকতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সেক্ষেত্রে সাকিবের বদলে শেখ মেহেদিকে দেখা যেতে পারে। মেহেদিকে হয়তো আজ ওপেন করানো হতে পারে। তাহলে ৪ নম্বর পজিশনে নেমে যাবেন নাজমুল।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় সব চাপ সামাল দিতে হচ্ছে তাওহিদ ও মাহমুদুল্লাহকে। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আম্পায়ার কলে লেগবিফোর হন তাওহিদ। তার আগে ৩৭ রান করেন ৩৪ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায়। শেষ দুই বলে জয়ের যখন দরকার ৬ রান, তখন ছক্কা মারতে গিয়ে মাহমুদুল্লাহ লং অনে আউট হন। রান করেন ২৭ বলে ২০। শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও দুজন ছিলেন ব্যাটিং ভরসা। মাহমুদুল্লাহ ম্যাচ জেতান ১৩ বলে ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। তাওহিদ দ্বীপরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২০ বলে ৪০ রান করেন ৪ ছক্কায়। আজও টপ অর্ডারের জ্বলে ওঠার সঙ্গে দুজনকে পারফরম্যান্স করতে হবে। তাহলেই সুপার এইট খেলবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে জেতা ম্যাচ হেরে যায়। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই ক্রিকেট প্রেমিদের। তার পরও সবার আশা আজ নেদারল্যান্ডসকে শোচনীয়ভাবে হারিয়ে সুপার এইটের রাস্তা সহক করবে। পরবর্তী ম্যাচ নেপালের বিপক্ষে। দুটি ম্যাচই জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে টাগারদের। তবুও ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা এখানে কখন কি ঘটে বলা যায় না। সতর্কভাবেই খেলতে নাজমুল হোসেন শান্তদের।