ইয়াবা সেবন করে টর্চার সেলে শিশু-বৃদ্ধদের পেটাতেন মিল্টন : হারুন
মিল্টন সমাদ্দার ইয়াবা সেবন করে টর্চার সেলে শিশু ও বৃদ্ধদের পেটাতেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সোমবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার মাদকসেবী এবং তিনি ইয়াবা সেবন করেন। নিজেই ইয়াবা সেবনের কথা স্বীকার করেছেন। তার টর্চার সেলে অত্যাচারের মাত্রা ছিল অমানবিক। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের এভাবে কেউ পেটাতে পারে না। তার পেটানোর চিত্র এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তিনি বলেন, তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে বিভিন্ন মানুষকে প্রতারিত করে বৃদ্ধ, অনাথ শিশু ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের পুঁজি করে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা কামাচ্ছিলেন মিল্টন। এই টাকাগুলো মিল্টনের অ্যাকাউন্টে জমা হলেও অসহায় মানুষদের জন্য তিনি খরচ করেননি। তিনি হাসপাতালে না নিয়ে নিজেই চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, মিল্টনকে নিয়ে আরো লোহমর্ষক ঘটনার তথ্য পেয়েছি। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সবগুলো অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল নকল করে জাল মৃত্যু সনদ দেয়ার বিষয়টি ধীরে ধীরে স্বীকার করা শুরু করেছেন মিল্টন।
তিনি আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মিল্টন স্বীকার করেছেন তার অপারেশন থিয়েটারের কথা। যেখানে সে এই কাটাছেঁড়া করতেন। সেইসাথে টর্চার সেলের কথাও জানা গেছে। যেখানে সে এসব অসহায় মানুষদের পেটাতেন। ডিবিপ্রধান বলেন, মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছেন। এই সময়ে তার আশ্রমে থাকা বৃদ্ধ, অনাথ শিশু ও মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি যারা আছেন তাদেরকে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন থেকে সব ধরনের সেবা প্রদান করা হবে। আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের কর্ণধার রোববার ডিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন।
তাকে অনুরোধ করা হয়েছে মিল্টনের আশ্রমে থাকা ব্যক্তিদের খাওয়া-দাওয়া ও চিকিৎসা সেবা দিতে। এছাড়া সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক থাকবেন যিনি চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন। এতে যা খরচ হবে সেই খরচ আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন থেকে ব্যয় করা হবে। গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগ। পরে তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা হয়।